থেমে গেল ১৪ দিনের লড়াই। প্রাণ হারালেন কামারহাটির যুবক সৌমেন দাস। তৃণমূলকর্মী (All India Trinamool Congress) হিসেবে পরিচিত এই সৌমেন দাসের (Soumen Das) মৃত্যুর জন্য কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে কামারহাটি পুরসভার কাউন্সিলর রুপালি সরকারকে। অভিযুক্ত কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুসছে সমগ্র এলাকা।
গত ৫ই মে সোমবার কামারহাটি পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে ত্রাণ দেওয়া নিয়ে গন্ডগোল এর জেরে কাউন্সিলর রুপালি সরকারের সঙ্গে একই এলাকার সৌমেন দাস নামে এক যুবকের ঝামেলা বাধে। কাউন্সিলরের লোকজনকে বেধড়ক মারধর করায় তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভরতি ছিল।
মঙ্গলবার ভোরে সৌমেন দাস এর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।তবে কোনরকম গন্ডগোল এড়াবার জন্য আগে থেকেই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করায় ফুঁসছে এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য, গত ৫ মে সোমবার রাতে কামারহাটি পৌরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বেলঘরিয়া বাসুদেবপুর এলাকায় তৃণমূলকর্মী হিসেবে পরিচিত একদল যুবক পাড়ার কয়েকজন দুস্থদের ত্রাণ বিলি করছিল। অভিযোগ, সেই সময় পাড়ার ছেলেদের কাউন্সিলর রুপালী সরকার বলেন, আমি থাকতে তোরা কেন এখানে ত্রান দিচ্ছিস। সৌমেন দাস নামে এক তৃণমূলকর্মী তখন বলেন যে, আমরা নিজেরাই অল্প কিছু জোগাড় করতে পেরেছি তাই সেগুলই বিলি করছি। আপনি যা দেবেন সেটাও ওনাদের কাজে লাগবে।
এই কথা শুনে রেগে গিয়েই কাউন্সিলর রুপালী সরকার সৌমেনের চুলের মুঠি ধরে ঝাঁকাতে শুরু করেন, তারপর তার সাথে থাকা ছেলেরা বাঁশ, লাঠি ও রড দিয়ে ব্যপক মারধর করে বলে অভিযোগ করেন সৌমেনের মা অনিতা দাস। তারপর তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে সাগর দত্ত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কলকাতার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়।
এদিন সৌমেন দাসের মৃত্যুর পর থেকেই কাউন্সিলর রুপালির বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষোভ। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া চেয়ে কাউন্সিলর রুপালি সরকারকা এফোন করা হলে তিনি তা ধরেননি। কখনও আবার ফোন কেটে দিয়েছেন। এই বিষয়ে কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেছেন, “প্রশাসন নিজের মতো কাজ করবে। সেই কাজে দল হস্তক্ষেপ করবে না। দলের পক্ষ থেকেও বিষয়টির তদন্ত করা হবে।”
অন্যদিকে, গত ৬ মে সকালে সৌমেন মারা যায়, এমন একটা ভুল খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।এরপরই উত্তেজিত জনতা রূপালী সরকারের বাড়িতে ভাঙচুর করে।ঘটনাস্থলে বেলঘড়িয়া থানার পুলিশ এলে পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরু হয় ইট বৃষ্টি। এতে এক পুলিশ কর্মী আহত হন।পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশও পাল্টা লাঠিচার্জ করে। চালানো হয় কাঁদুনে গ্যাস।